কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) :

সাধারণত সপ্তাহে ৩ বারের কম মল ত্যাগ হলে আমরা তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলব। তবে মলত্যাগের সংখ্যা যতবারই হোক না কেন মল যদি শক্ত হয় এবং মলদ্বার দিয়ে বের হতে কষ্ট হয় তাহলেও তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।





আয়ুর্বেদ চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে বিবন্ধ বলা হয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই সমস্যার খুবই কার্যকরী সমাধান রয়েছে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম হল-

* কোন শারীরিক পরিশ্রম না করে বসে থাকা কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করা।
* তরল খাবার ও শাক সবজি কম খাওয়া।
* মানসিক যন্ত্রণা , দুশ্চিন্তা, শোক, দু:খ ইত্যাদি।
* বার্ধক্যজনিত বা স্নায়বিক কারনে পেরিষ্টালসিস কমে যাওয়া।
* অল্প খাবার গ্রহণ করা।
* বিভিন্ন ধরনের রোগে ভোগা।
* গুরুপাক খাবার বেশি খাওয়া।
* বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন যেমন- ক্যালসিয়াম , আয়রণ প্রভৃতি
* গর্ভধারণ জনিত কারনে ।
* মল বেগ ধারণ জনিত কারন ।
প্রভৃতি কারনে সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিকার নির্ভর করে তার কারনের উপর তবে এখানে সাধারণ কিছু নিয়ম তুলে ধরা হল যা প্রায় সব ধরনের কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্যঃ

* রোজ নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত সকাল বেলায় মলত্যাগের অভ্যাস করতে হবে এমনকি মল বেগ না হলেও নিয়মিত টয়লেটে যেতে হবে।
* আশযুক্ত খাবার নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।
* প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ( ৬- ৮ গ্লাস) ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে।
* সকালে নাস্তার আধা ঘন্টা পূর্বে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করতে হবে।
* নিয়মিত মৃদু শরীর চর্চা করতে হবে।
* দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।

এখানে কোষ্ঠকাঠিন্যে কার্যকর কিছু আয়ুর্বেদিক একক ও যৌগিক ঔষধের তালিকা দেওয়া হল-

যে কোন ঔষধ গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই রেজিষ্টার্ড আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। নিজে নিজে যে কোন ঔষধ গ্রহণ বিপদজনক হতে পারে।

একক ঔষধ সমূহঃ

ঘৃতকুমারী ( Aloe vera ):

১ চা চামুচ ঘৃতকুমারীর শাশ ১ কাপ পানির সাথে মিশিয়ে রাতে সেব্য। এক নাগাড়ে ৭ দিনের বেশি নয়।
সতর্কতাঃ গর্ভাবস্থা, হৃদরোগ, অন্ত্র- সমন্ধীয় জটিলতায়, পাইলস, কিডনি রোগ, ইলেক্ট্রোলাইট এর গড়মিল প্রভৃতি অবস্থায় সেবন করা যাবে না।

ইসবগুলের ভূষি ( Plantago ovata ):

১-২ চা চামুচ ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে সেব্য দিনে ১-২ বার । ১ মাস একনাগাড়ে খাওয়া যেতে পারে
সতর্কতাঃ এটা সেবন কালে পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

সোনা পাতা ( Cassia senna ):

১৭ মিগ্রা দিনে ১- ২ বার সেব্য। একনাগাড়ে ১৪ দিনের বেশী সেবন করা যাবে না।
সতর্কতাঃ হৃদ রোগ, ইলেক্ট্রোলাইটের গড়মিল,
অন্ত্র- সন্মন্ধিয় জটিলতায়, আলসারেটিভ কোলাইটিস, এপেন্ডিসাইটিস, পাইলস প্রভৃতি অবস্থায় সেবন করা যাবে না।

হরিতকি ( Chebulic myrobalan ):

১-২ চামুচ দিনে ১-২ বার সেব্য ।
সতর্কতাঃ যারা ডায়াবেটিস এর ঔষধ সেবন করছেন তাদের ব্লাড সুগার ঘন ঘন পরিমাপ করতে হবে, গর্ভাবস্থা ও দুগ্ধদানকালীন সময় সেবন করা যাবে না।

যৌগিক ঔষধ সমূহঃ

* Syp. Abhyarista
৪ চা চামুচ করে দিনে ২ বার, সমপরিমাণ পানি সহ সেব্য ।
* Syp. Pathyadi kwath
৪ চা চামুচ করে দিনে ২ বার, সমপরিমাণ পানি সহ সেব্য ।
* Tab. Icchabhedi Rasa- 250mg
১ টা ট্যাবলেট গরম পানিসহ একবার সেব্য। প্রয়োজনে ৭ দিন পরে পুনরায় সেব্য ।

লেখক:


বিএএমএস (ঢাবি), ডিএমইউ
সরকারি রেজিষ্ট্রেশন নম্বরঃ A-171
মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পবা, রাজশাহী

চেম্বার : ইয়াশ বিডি হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার, রাজশাহী। 

সিরিয়াল : ০১৭৭০-১০১৫২৬, ০১৩২৭-৮৯৪৫৬৯ 

ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এপয়েন্টমেন্ট নিতে নিচের লিখায় ক্লিক করুনঃ 

বুক এপয়েন্টমেন্ট 

Comments

Popular posts from this blog

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি

অশ্বগন্ধা (Withania somnifera )

আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর