আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর

আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর এখানে তুলে ধরা হলোঃ

আমরা জানি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রায় ৫ হাজার বছরের পুরাতন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি, যা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO) কতৃক স্বীকৃত এবং দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষিত একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি আমাদের নিজস্ব চিকিৎসা পদ্ধতি হওয়া স্বত্তেও আমারা এই চিকিৎসা সম্পর্কে খুবই কম ধারণা রাখি। তাই আমাদের দেশীয় এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।



# আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্ব - প্রতিক্রিয়া নাই এই কথার অর্থ কি?

সহজ ভাষায় পার্শ্ব - প্রতিক্রিয়া হল আপনি কোন অসুখের জন্য কোন ঔষধ সেবন করলে তা আপনার ঐ অসুখটা ভাল করার পাশাপাশি আপনার শরীরে অন্য কোন খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা। এই ধরনের পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়া সাধারণত আয়ুর্বেদিক ঔষধে হয় না।

# আয়ুর্বেদিক ঔষধ কি ইচ্ছামত খাওয়া যাবে?

অবশ্যই না, কারণ আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়া না থাকলেও ক্রিয়া রয়েছে যার ফলে আপনি সঠিক জায়গায় সঠিক ডোজে এটা গ্রহণ না করলে এর স্বাভাবিক ক্রিয়ার কারনেই আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন । উদাহরণ স্বরুপ আপনি শরীরের জন্য উপকারী যে কোন খাবার যদি বেশি পরিমানে খান সেটা অবশ্যই আপনার উপকার না করে ক্ষতি করবে আর এটাতো ঔষধ যা বিভিন্ন রোগের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তাই অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট ডোজে ঔষধ গ্রহণ করতে হবে।

# আয়ুর্বেদিক ঔষধ কি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গায়ে লিখা কার্যকরীতা দেখে অথবা ঔষধ বিক্রেতার নির্দেশনা মতো সেবন করা যাবে?

এইটাও আপনার জন্য বিপদজনক হতে পারে কারণ আয়ুর্বেদিক ঔষধের লেবেলে শুধু কার্যকরীতা লিখা থাকে কিন্তু ঐ ঔষুধটা কারা খেতে পারবে না, কোন কোন অসুখ থাকলে সেটা খাওয়া যাবে না বা ঐটা খাওয়ার পরে কোনো ধরনের সমস্যা হলে কি করতে হবে এই বিষয়গুলোর কোন নির্দেশনা ঔষধের লেবেলে দেওয়া থাকে না বা ঔষধের দোকানদারও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জানেন না, সেই তথ্যগুলো একজন রেজিঃ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক জানেন, তাই প্রাকৃতিক নিরাপদ ঔষধ হওয়া স্বত্তেও এই ঔষধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া খাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

এই ক্ষেত্রে মহর্ষি চরক এর একটি উদ্ধৃতি নিচে তুলে ধরা হলো-

"একটি শক্তিশালী বিষ সঠিক ব্যবহারে সেরা ঔষধে পরিণত হয়। বিপরীতে, খারাপভাবে ব্যবহার করা হলে সেরা ঔষধটিও একটি শক্তিশালী বিষে পরিণত হয়।" - আয়ুর্বেদিক স্কলার ও চিকিৎসক মহর্ষি চরক

সুতরাং বুঝতেই পারছেন একটা ঔষধ ভুল প্রয়োগে রোগীর জন্য বিষের মতো ক্ষতিকর হতে পারে।

আয়ুর্বেদিক ঔষধ কি গাছগাছড়া দিয়ে তৈরি হয়?

এই কথাটিও পুরোপুরি সঠিক নয়। আয়ুর্বেদিক মেডিসিন এর উৎস হলো মূলত তিনটি - ১) ভেষজ উৎস বা যাকে আপনারা গাছগাছড়া বলে থাকেন, ২) প্রানীজ উৎস, ও ৩)খনিজ উৎস।

# আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় কি শুধু যৌন রোগের চিকিৎসা হয়?

এটা একেবারেই ভুল ধারণা। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা বিজ্ঞান। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এর লক্ষ্য হলো সুস্থের স্বাস্থ্য রক্ষা ও রোগীর রোগ নিরাময়। 

আয়ুর্বেদে প্রায় সকল ধরনের ক্রোনিক রোগের কার্যকরী ও নিরাপদ চিকিৎসা রয়েছে। তবে আপনাকে প্রকৃত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক এর চিকিৎসা নিতে হবে, না হলে আপনি এই চিকিৎসার সুফল থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।


# আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় কি ডিগ্রিধারী চিকিৎসক রয়েছেন?


জ্বি।  আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বাংলাদেশে ২ ধরনের ডিগ্রিধারী চিকিৎসক রয়েছেন। স্নাতক ও ডিপ্লোমা।  স্নাতক মানের এমবিবিএস সমমানের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ডিগ্রি হলো "বিএএমএস" যার পূর্ণ রুপ- "ব্যাচেলর অফ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি।" আর ডিপ্লোমা মানের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ডিগ্রি হলো  "ডিএএমএস" যার পূর্ণ রুপ -

"ডিপ্লোমা ইন আয়ুর্বেদিক মেডিসিন এন্ড সার্জারী।"


সচেতনতায়ঃ



বিএএমএস (ঢাবি), ডিএমইউ
সরকারি রেজিষ্ট্রেশন নম্বরঃ A-171
মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পবা, রাজশাহী

চেম্বার : ইয়াশ বিডি হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার, রাজশাহী। 

সিরিয়াল : ০১৭৭০-১০১৫২৬, ০১৩২৭-৮৯৪৫৬৯ 

ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এপয়েন্টমেন্ট নিতে নিচের লিখায় ক্লিক করুনঃ 

বুক এপয়েন্টমেন্ট 

Comments

Popular posts from this blog

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি

অশ্বগন্ধা (Withania somnifera )