চুল পড়া সমস্যার আয়ুর্বেদিক সমাধান

চুল পড়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা যা শুধু সৌন্দর্যের উপরেই প্রভাব ফেলে না পাশা-পাশি আবেগ, মানসিক অবস্থা ও সামাজিক অবস্থা্র উপরেও যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। আমরা সবাই চাই আমাদের সুন্দর চুল গুলো স্থায়ী হোক।কিন্তু সবার ক্ষেত্রে সেটা হয় না।আজ আমরা আয়ুর্বেদ চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে এই সমস্যার সমাধান খুজতে চেষ্টা করবো।




আমরা জানি স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিদিন আমাদের প্রায় ১০০ টি চুল পড়তে পারে, যাদের এর চাইতে বেশি পড়ছে এবং নতুন চুল গজানোর প্রক্রিয়াটি কোন কারনে বিঘ্নিত হচ্ছে তারাই মূলত সমস্যায় পড়ছেন।মহিলাদের ক্ষেত্রে চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে আর পুরুষদের ক্ষেত্রে টাক পড়ে যাচ্ছে।

অস্বাভাবিক চুল পড়ার কারণ সমূহ:

• পিত্তাধিক্য
• বংশগত
• কোন অসুখের কারনে
• কোন ঔষধের কারনে
• অতিরিক্ত দু:শ্চিন্তা
• পুষ্টির অভাব
• অপরিষ্কার তালু
• হরমোনের অস্বাভাবিকতা
• অতিরিক্ত শক্ত করে চুল বাধা প্রভৃতি

চুল পড়া কমাতে খাদ্যাভাস :

যে সকল খাবার উপকারী –

• দুধ
• ডিম
• সোয়াবিন
• পনির
• মাখন
• ঘোল
• ঘী
• দানা জাতীয় খাবার
• বাদাম
• দই
• মৌসুমি শাক সবজি ও ফলমূল
• পর্যাপ্ত পরিমান পানি প্রভৃতি।

যে সকল খাবার ক্ষতিকর-

• ভাজা পোড়া খাবার
• টক জাতীয় খাবার
• সাদা ময়দা
• সাদা চিনি
• প্রক্রিয়াজাত খাবার
• অতিরিক্ত চা, কফি, কাসুন্দি, এলকোহল
• ধূমপান প্রভৃতি

ঘরোয়া পরামর্শ:

• চুলের বৃদ্ধি ও অসময়ে চুল পাঁকা রোধে ভৃঙ্গরাজের পাতার পেষ্ট ১৫-৩০ মিনিট মাথায় রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে যদি টাটকা পাতা না পাওয়া যায় তাহলে শুকনো পাতা গরম পানিতে ভিজিয়ে ঠান্ডা করে ব্যবহার করতে পারেন।
• আমলকির রস ও লেবুর রস সমপরিমান নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মাথার তালুতে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
• মেথি ভেজে নিয়ে চূর্ণ করে গরম পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরী করে মাথার তালু্তে ও চুলে ব্যবহার করতে হবে ২০ মিনিট রেখে ভালো করে ধূয়ে ফেলতে হবে।
• পিয়াজের রস ও লেবুর রস সমপরিমান ভালো করে মিশিয়ে মাথার তালুতে ভালো ভাবে লাগিয়ে ১ ঘন্টা পরে ধূয়ে ফেলতে হবে।

তৈল সমূহ:

• যাদের চুল কোকড়ানো, শুষ্ক এবং আগা ফেটে যায় তারা এলমন্ডের তৈল বা এলমন্ড সমৃদ্ধ কোন তৈল নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
• স্বাভাবিক চুলের জন্য নারিকেল তৈল ব্যবহার করা যেতে পারে।
• যাদের মাথায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয় এবং যারা সাতারবিদ বা নিয়মিত পানিতে কাজ করেন তাদের জন্য তিল তৈল খুবই উপকারী।
• যাদের চুল মোটা ও তৈলাক্ত তাদের জন্য আমলকির তৈল বা আমলকি সমৃদ্ধ তৈল উপকারী।

জীবণ যাত্রা প্রণালী :

• দু:শ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।
• নিয়মিত শরীর চর্চা করত হবে।
• প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট মাথার তালুতে নিয়মিত আঙ্গুল দিয়ে মাসাজ করতে হবে
• অতিরিক্ত রোদ ও গরম এরিয়ে চলতে হবে।
• নিয়মিত রাতে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
• সুসম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

উপরোক্ত পরামর্শ গুলো সঠিকভাবে মেনে চললে চুল পরার সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবার কথা তবে এগুলো মেনে চলার পরেও যাদের সমস্যা কমবে না তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক:


বিএএমএস (ঢাবি), ডিএমইউ
সরকারি রেজিষ্ট্রেশন নম্বরঃ A-171
মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পবা, রাজশাহী

চেম্বার : ইয়াশ বিডি হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার, রাজশাহী। 

সিরিয়াল : ০১৭৭০-১০১৫২৬, ০১৩২৭-৮৯৪৫৬৯ 

ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এপয়েন্টমেন্ট নিতে নিচের লিখায় ক্লিক করুনঃ 

বুক এপয়েন্টমেন্ট 

Comments

Popular posts from this blog

অশ্বগন্ধা (Withania somnifera )

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি

আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর